Tuesday, March 12, 2013

আগুন বিস্ফোরণে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে

কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রাজধানীসহ সারাদেশে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ, ককটেল বিস্ফোরণ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের ডাকে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।

সোমবার বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশস্থলে ককটেল বিস্ফোরণ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের আটকের প্রতিবাদে এই হরতাল পালিত হচ্ছে।

হরতাল চলাকালে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল পুলিশ ফাঁড়ির সামনে একটি বাসে আগুন দেয় হরতাল সমর্থকরা।

সকালে রাজধানীতে কয়েকটি স্থানে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রেখেছে পুলিশ। দুপুর আড়াইটার দিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকতে চাইলে ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নানকে বাধা দেয় পুলিশ।

এছাড়া সকাল ৮টার দিকে শনির আখড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ব্যানারে মিছিল বের করে শিবির। ১০ থেকে ১৫ মিনিট স্থায়ী এ মিছিলে অংশ নেন প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী। মিছিলের একটু পরেই সেখানে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার আগেই মিছিলটি শেষ করেন তারা। পুলিশ বর্তমানে ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে।

হরতালের শুরুতেই মিরপুর এক নম্বর গোলচত্বর ওভার ব্রিজের নিচে পরপর কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। সেখানে গাড়ি ভাংচুরও করা হয়। পুলিশ এক চালককে আটক করে।

মিরপুরে পাইকপাড়ায় হরতালের সমর্থনে শিবির ঝটিকা মিছিল করে। এ সময় আশপাশে পুলিশকে দেখা যায়নি।

সকাল সোয়া ৭টার দিকে একইভাবে পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাট এলাকায় আরেকটি ঝটিকা মিছিল বের করে শিবির। এ সময় কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে মিছিলকারীরা আশপাশের অলি-গলিতে পালিয়ে যায়। এ সময় একজনকে আটক করে পুলিশ।

যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে রাজধানীজুড়ে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিভিন্ন সড়কে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবের কড়া নজরদারি রয়েছে।

সংখ্যায় কম হলেও ভোর থেকেই রাজধানীর সড়কগুলোতে রিকশা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে।

চট্টগ্রামে কালকের হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান মাওলানা শফীর প্রত্যাখ্যান

সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হেফাজতে ইসলামের আমির, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড সভাপতি আল্লামা শাহ্ আহমেদ শফীকে গতকাল হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান জানালে তিনি তা নাকচ করে দেন। আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী সরকারি কর্মকর্তাদের জানান, ওলি-আউলিয়া ও পীর-মাশায়েখের পুণ্যভূমি চট্টগ্রামের পবিত্র মাটিতে ইসলাম ও আল্লাহ-রাসুলের জঘন্য কটূক্তিকারী শাহবাগি নাস্তিকদের প্রতিহত করা হবে। ১৩ মার্চ (আগামীকাল) চট্টগ্রামে কঠোর হরতাল পালন হবে এবং লাখ লাখ তৌহিদি জনতা রাস্তায় অবস্থান করে রাসুল (সা.) অবমাননাকারী নাস্তিকদের প্রতিহত করবে। এই পবিত্র ভূমিতে আল্লাহর দুশমনদের প্রবেশ করার যে কোনো প্রচেষ্টা সর্বাত্মকভাবে প্রতিহত করতে হবে। এটা কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। সরকারের বা কোনো দলের পক্ষে-বিপক্ষের কর্মসূচি নয়। এটা আল্লাহ, আল্লাহর রাসুলের (সা.) ইজ্জত রক্ষার কর্মসূচি।
গতকাল বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এমএ মান্নান, জেলা পুলিশ সুপার হাফিজ আক্তার, এসপি ডিএসবি রবিউল ইসলাম, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান পান্না, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) হাফিজ আক্তারসহ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসায় আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। তারা আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর সঙ্গে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও মতবিনিময় করেন।
তিনি বলেন, ১৩ মার্চ শাহবাগি নাস্তিকরা চট্টগ্রামে প্রবেশের চেষ্টা করলে তৌহিদি জনতা কঠোর হরতাল ও অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের প্রতিহত করবে। আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বলেন, পবিত্র ইসলাম ধর্ম ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মুসলমানের নয়নমণি রাসুলের (সা.) বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র ও কটূক্তিতে একজন সাধারণ মুসলমানও নীরব থাকতে পারেন না। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনারাই বলছেন চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আছে এবং দেশের অন্যান্য শহর থেকে এখানে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। তাহলে পাঁচ দশজন নাস্তিককে চট্টগ্রামে এনে কেন কোটি মানুষের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে অশান্ত করার প্রয়াস চলছে? আপনারা সরকারকে জানান চট্টগ্রামের মানুষ নাস্তিকদের গ্রহণ করবে না।
জেলা প্রশাসক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীকে তাদের সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে বলেন, আমরা সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলকে জানাবো।
এদিকে বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এম.এ. সালাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রফেসর মুহাম্মদ ইসমাঈল আল্লামা শাহ্্ আহমদ শফীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন। এ সময় নেতারা শাহবাগি আন্দোলনের নেতা ডা. ইমরান এইচ সরকার যাতে ১৩ তারিখ চট্টগ্রামে সমাবেশ করতে না আসে সে জন্য চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দেন।

Wednesday, February 20, 2013

সংবাদ সম্মেলনে মুক্ত ফখরুল

এদিকে মুক্তি পাওয়ার পর তিন নেতা সরাসরি নয়া পল্টনের দলীয় কার্যালয়ে যান। সেখানে তাৎক্ষনিক এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল জানান, আটক সকল নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। হরতাল প্রত্যাহর নয়, আগামী ১৮ ও ১৯ তারিখের হরতাল কর্মসূচী থাকবে। তিনি বলেন, পুলিশের উদ্ধার করা এসব বিস্ফোরক আমাদের অফিসে ছিল না। অভিযানে সবই ছিল পুলিশের সাজানো নাটক। পুলিশ যা করেছে তা অগনতান্ত্রিক। তিনি বলেন, জনগনের আন্দোলনের মুখে আজ আমাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ সরকার নিজেরাই সমস্যা তৈরী করে তা বিরোধী দলের ওপর চাপিয়ে দিয়ে দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চায়। সরকার আমাদের শান্তিপূর্ণ সভায় গোলযোগ সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, পুলিশ আমাদের অফিসের কম্পিউটার ভাংচুর, অর্থ লুণ্ঠন, টিভি ও এসি নষ্ট করে দিয়েছে। এছাড়া জরুরী দলীলপত্র নিয়ে গেছে। চেয়ার টেবিল ভাংচুর হয়েছে।

তিনি বলেন,এ সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বর করে না তার প্রমাণ গতকাল দিয়েছে। তিনি আবিলম্বে আটক সকলের মুক্তির দাবী জানান।